চীন খাদে, বাংলাদেশ কোথায়

 চীন খাদে, বাংলাদেশ কোথায়

যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিকারকেরা ২০১৯ সালের তুলনায় গত বছর সাড়ে ২৩ শতাংশ পোশাক কম কিনেছেন।

·         বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনের হারানো ক্রয়াদেশের একটি অংশ বাংলাদেশে আসতে থাকে।

·         ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৫৯৩ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়, যা সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

·         ২০২০ সালের শুরুর দিকে রপ্তানি ঊর্ধ্বমুখী ছিল।

·         যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনের তৈরি পোশাক রপ্তানি খাদে নামিয়ে দিয়েছে করোনাভাইরাসের মহামারি। দেশটিতে ২০১৯ সালে চীনা উদ্যোক্তারা আড়াই হাজার কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করলেও গত বছর সেটি দেড় হাজার কোটি ডলারে নেমে গেছে। তাতে বাজারটিতে চীনের রপ্তানি কমেছে ৩৯ শতাংশের মতো।

·         যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনের মতো ভয়াবহ অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়নি বাংলাদেশকে। করোনায় সবকিছু ওলটপালট হওয়ার বছরে বাংলাদেশ ৫২২ কোটি ৯১ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। এই আয় ২০১৯ সালের চেয়ে ১১ দশমিক ৭৩ শতাংশ কম। রপ্তানি কমলেও এটিকে তুলনামূলক সন্তোষজনক বলা হচ্ছে। কারণ, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিকারকেরা আগের বছরের তুলনায় পোশাক কেনা এক চতুর্থাংশ কমিয়ে দিয়েছেন। বিভিন্ন দেশ থেকে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রেহাজার ৪০৭ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি হয়েছে, যা ২০১৯ সালের চেয়ে ২৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ কম।

চীন বাংলাদেশের সঙ্গে তুলনা করলে ভিয়েতনামের উদ্যোক্তাদের গায়ে করোনার আঁচড় তুলনামূলক কম লেগেছে। বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি যেখানে পৌনে ১২ শতাংশ কমেছে, সেখানে ভিয়েতনামের ব্যবসা কমেছে মাত্র সোয়াশতাংশ। ভিয়েতনাম সব মিলিয়েহাজার ২৫৭ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে দেশটিতে। তার আগের বছর তাদের রপ্তানি ছিলহাজার ৩৫৩ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক।

ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল (অটেক্সা) চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এই হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, গত বছরহাজার ৩১৩ কোটি বর্গমিটারের সমপরিমাণ কাপড়ের পোশাক কিনেছে যুক্তরাষ্ট্র। তার আগের বছর পরিমাণটি ছিলহাজার ৭৬৬ কোটি বর্গমিটার। করোনার বছরে তুলনামূলক কম দামের পোশাকই বেশি কিনেছে যুক্তরাষ্ট্র।

বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনের হারানো ক্রয়াদেশের একটি অংশ বাংলাদেশে আসতে থাকে। তাতে যুক্তরাষ্ট্রে ৫৯৩ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়, যা সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত বছরের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। জানুয়ারিতে ৬২ কোটি ডলার রপ্তানির বিপরীতে প্রবৃদ্ধি হয় ১৭ শতাংশ। পরের মাসেও প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ শতাংশ।


করোনার কোপে মার্চ থেকে রপ্তানিতে ধস নামে। বছরের শেষ দিকে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও সামগ্রিকভাবে রপ্তানি কমে যায় ১১ দশমিক ৭৩ শতাংশ। রপ্তানি কমলেও বাজারটিতে বাংলাদেশের হিস্যা বেড়েছে। ২০১৯ সালে হিস্যা ছিলশতাংশের কাছাকাছি। এখন সেটি বেড়ে হয়েছে

জানতে চাইলে নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি ফজলুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে করোনার টিকা ব্যাপক হারে দেওয়া হচ্ছে। সে কারণে আগামী গ্রীষ্ম থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে, এমন প্রত্যাশা নিয়ে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের তৎপরতা শুরু হয়েছে। তবে প্রকৃত অবস্থা বুঝতে মাসখানেক সময় অপেক্ষা করতে হবে।

ভিয়েতনামের চেয়ে বাংলাদেশ কতটা খারাপ করল, এমন প্রশ্নের জবাবে ফজলুল হক বলেন, ভিয়েতনামের কারখানাগুলো করোনার মধ্যেও উৎপাদন করেছে। মানে তাদের কারখানা ১২ মাসই খোলা ছিল। আমাদের এক মাস বন্ধ ছিল। তাই ১১ মাসের হিসাবে আমরা খারাপ করিনি। দ্রুত পণ্য সরবরাহ করতে পারায় ওভেন পোশাকের ক্রয়াদেশ বেশি পেয়েছে ভিয়েতনাম। সেখানে বাংলাদেশ পিছিয়ে ছিল।

অটেক্সার তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে গত বছর শীর্ষ সাত পোশাক রপ্তানিকারক দেশের মধ্যে কেবল কম্বোডিয়ার রপ্তানি বেড়েছে পৌনে শতাংশ। বাকি ছয় দেশের রপ্তানি কমেছে থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত। বাজারটিতে শীর্ষ তিন রপ্তানিকারক দেশ হচ্ছে চীন, ভিয়েতনাম বাংলাদেশ। তারপরের অবস্থানে থাকা ইন্দোনেশিয়া রপ্তানি করেছে ৩৫১ কোটি ডলারের পোশাক। তাদের রপ্তানি কমেছে ২০ শতাংশ। পঞ্চম অবস্থানে থাকা ভারত ৩০২ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। দেশটির

রপ্তানি কমেছে ২৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ

No comments

Theme images by Jason Morrow. Powered by Blogger.