অর্থনৈতিক কার্যক্রমে নারীর অংশগ্রহণে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে নিচে বাংলাদেশ
অর্থনীতি
অর্থনৈতিক
কার্যক্রমে নারীর অংশগ্রহণে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে নিচে বাংলাদেশ
অর্থনৈতিক কার্যক্রমে নারী ও পুরুষের সমান অংশগ্রহণে বিশ্বব্যাংকের করা সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘উইমেন, বিজনেস অ্যান্ড দ্য ল ২০২১ ইনডেক্স’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
১৯০টি দেশে আটটি সূচকের আলোকে ৩৫টি প্রশ্নের ভিত্তিতে এই সূচক প্রণয়ন করা হয়। মোট নম্বর ছিল ১০০। এই ১০০ নম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে ৪৯ দশমিক ৪। অর্থাৎ পুরুষের তুলনায় নারীরা গড়ে অর্ধেকেরও কম সুবিধা পাচ্ছেন। গত বছরের প্রতিবেদনেও বাংলাদেশ এই মানে ছিল।
এবারের প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে ভালো অবস্থান নেপালের। ১০০ নম্বরের মধ্যে নেপাল পেয়েছে ৮০ দশমিক ৬। গত বছর নেপালের নম্বর ছিল ৭৩ দশমিক ৮। এ বছর নেপালের পরেই রয়েছে ভারত। গত বছরের মতো এবারও ভারতের নম্বর ৭৪ দশমিক ৪। সূচকে তার পরেই ৭৩ দশমিক ৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে মালদ্বীপ। ভুটান ৭১ দশমিক ৯, শ্রীলঙ্কার ৬৫ দশমিক ৬ আর
পাকিস্তান রয়েছে ৫৫ দশমিক ৬ পয়েন্টে। গত বছর পাকিস্তানের পয়েন্ট ছিল ৪৯ দশমিক ৪। এ বছর অনেকটাই সমতা এনেছে পাকিস্তান। এই অঞ্চলে শুধু আফগানিস্তানের (৩৮.১) ওপরে রয়েছে বাংলাদেশ।
চলাচলের স্বাধীনতা, কর্মক্ষেত্রের সমতা, মজুরি, বিবাহ, পিতৃত্ব-মাতৃত্ব, উদ্যোগ, সম্পদ ও পেনশন—এই আট সূচকের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রতিটি সূচকের সর্বোচ্চ নম্বর ১০০। এরপর তা গড় করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, নারী-পুরুষ সমতার ক্ষেত্রে সূচকে শতভাগ পয়েন্ট অর্জন করেছে ১০টি দেশ। অর্থাৎ অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণে সামান্যতম বাধা নেই এসব দেশে। দেশগুলো হলো বেলজিয়াম, কানাডা, ডেনমার্ক, আয়ারল্যান্ড, আইসল্যান্ড, লাটভিয়া, লুক্সেমবার্গ, ফ্রান্স, পর্তুগাল ও সুইডেন।
এতে দেখা গেছে, চলাচলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নারীরা শতভাগ স্বাধীন। অর্থাৎ বাংলাদেশের নারীদের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ায় বাধা নেই। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মজুরি, কর্মকালীন মাতৃত্ব সুবিধা ও পেনশনে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে দেশের নারীরা। কর্মকালীন মাতৃত্ব সুবিধার ক্ষেত্রে ১০০–তে বাংলাদেশের পয়েন্ট মাত্র ২০। মজুরি ও পেনশনের ক্ষেত্রে পয়েন্ট ২৫ করে। এ ছাড়া বিবাহে ৬০, উদ্যোগে ৭৫, সম্পদে ৪০ পয়েন্ট পেয়েছে বাংলাদেশ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, নারী-পুরুষ সমতার ক্ষেত্রে সূচকে শতভাগ পয়েন্ট অর্জন করেছে ১০টি দেশ। অর্থাৎ অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণে সামান্যতম বাধা নেই এসব দেশে। দেশগুলো হলো বেলজিয়াম, কানাডা, ডেনমার্ক, আয়ারল্যান্ড, আইসল্যান্ড, লাটভিয়া, লুক্সেমবার্গ, ফ্রান্স, পর্তুগাল ও সুইডেন। আটটি সূচকেই ১০০ পয়েন্ট করে পেয়েছে দেশগুলো। গত বছর আটটি দেশ ১০০ পয়েন্ট অর্জন করেছিল।
প্রতিবেদনে আশঙ্কা করা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী করোনার প্রভাবে নারী-পুরুষ ব্যবধান বেড়ে যেতে পারে। অর্থনৈতিক সম্ভাবনা কাজে লাগাতে নারীরা এখনো আইন ও নীতির বাধায় রয়েছেন। বৈশ্বিক পরিসরে নারীদের অর্থনীতিতে অংশগ্রহণের আইনি অধিকার চার ভাগের তিন ভাগ, অর্থাৎ ৭৫ শতাংশ।
এবারের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মুসলিম দেশগুলোর ৭৫ শতাংশই গড় পয়েন্ট অর্জন করতে পারেনি। এই অবস্থান এটাই নির্দেশ করে যে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোকে নারী-পুরুষের সমান সুযোগ অর্জনে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে। তালিকার সবচেয়ে কম পয়েন্ট রয়েছে ঘানা, ইয়েমেন, কুয়েত, সুদান, কাতার, ইরাক, ওমান, সিরিয়া ও আফগানিস্তানের।
২০২১ সালের এই প্রতিবেদন ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে গত অক্টোবর পর্যন্ত সময়ের ভিত্তিতে করা হয়েছে। ১৯০টি দেশের মধ্যে ৫৬টি দেশই গড় পয়েন্ট পায়নি। করোনার এই সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে। তবে করোনার পরেও ২৭টি দেশ নারী-পুরুষ সমতায় নানা সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
No comments