উৎসে কর বাড়ানোর প্রস্তাবে পোশাকশিল্পমালিকদের ‘না’
উৎসে কর বাড়ানোর প্রস্তাবে পোশাকশিল্পমালিকদের ‘না’
রপ্তানির বিপরীতে উৎসে কর বর্তমানের মতো দশমিক ৫ শতাংশ আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত বহাল রাখার দাবি করেছে সংগঠনটি।
রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে গতকাল সোমবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে একদিকে যেমন জ্বালানি তেলসহ খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, অন্যদিকে ইউরোপসহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশে অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কাও বাড়ছে। ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি তীব্র আকার ধারণ করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য দেশগুলো সুদের হার বাড়াচ্ছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের পণ্যের চাহিদা ও ক্রয়ক্ষমতা কমেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর সহসভাপতি এস এম মান্নান ও শহিদউল্লাহ আজিম, পরিচালক আবদুল্লাহ হিল রাকিব, আসিফ আশরাফ, তানভীর আহমেদ, নাভিদুল হক প্রমুখ।
বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, ‘করোনার কারণে গত দুই বছর আমাদের তেমন কোনো কর্মসংস্থান তৈরি হয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের প্রবাসী আয়ে মন্দাভাব ও আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় লেনদেন ভারসাম্যে চাপ তৈরি হয়েছে। আর ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক মন্দার যে পূর্বাভাস আমরা পাচ্ছি, সেটি মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে পোশাকশিল্পের অগ্রযাত্রা যেকোনোভাবেই মসৃণ রাখা দরকার।’ তিনি আরও বলেন, ‘রপ্তানির বিপরীতে উৎসে কর বর্তমানের মতো অর্থাৎ দশমিক ৫ শতাংশ আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত কার্যকর রাখলে শিল্পটি বর্তমান সংকটকালে স্বস্তিতে থাকবে।’
নন-কটন পোশাক রপ্তানিতে ১০ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার দাবি করেন ফারুক হাসান। তিনি বলেন, ‘আমাদের মোট পোশাক রপ্তানির ৭৫ শতাংশ কটনের তৈরি। তবে সারা বিশ্বে নন-কটন পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। ২০১৭ সালে কৃত্রিম তন্তু দিয়ে তৈরি কাপড়ের ব্যবসা ছিল ১৫ হাজার কোটি ডলারের। সেখানে বাংলাদেশের হিস্যা ছিল মাত্র ৫ শতাংশ। অথচ আমাদের প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনামের হিস্যা ছিল ১০ শতাংশ। গত পাঁচ বছরে আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলো এই খাতে অনেক এগিয়ে গেছে।’ তাই নন-কটন পোশাকের বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে বিশেষ নীতি সহায়তা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তৈরি পোশাক রপ্তানিতে নগদ সহায়তার ওপর ১০ শতাংশ কর প্রত্যাহারের দাবি করেন বিজিএমইএ সভাপতি। তিনি বলেন, যেহেতু নগদ সহায়তা কোনো ব্যবসায়িক আয় নয়, তাই নগদ সহায়তার অর্থকে করের আওতার বাইরে রাখাই যুক্তিসংগত। এ ছাড়া সৌরবিদ্যুতের প্যানেলের ওপর শুল্কহার শূন্য করার দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এ বিষয়ে বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, ‘করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর সীতাকুণ্ডের ঘটনা পোশাকশিল্পের জন্য বড় আঘাত। এতে আর্থিক ক্ষতির চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমাদের ভাবমূর্তির।’
No comments