খুলছে শিল্পকারখানা
খুলছে
শিল্পকারখানা
করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আরোপ করা বিধিনিষেধের কারণে ঈদের পর অধিকাংশ কারখানার চাকা বন্ধ হয়ে যায়। ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে ১ আগস্ট থেকে পোশাকসহ রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা খুলে দেওয়া হয়। পরে ৫ আগস্ট অন্যান্য শিল্পকারখানাও খোলার অনুমতি পায়। তারপরও ধাপে ধাপে শিল্পকারখানা খুলছে। গতকাল মঙ্গলবারও আশুলিয়া-সাভার, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনার ৪৪৫ কারখানা বন্ধ ছিল। আর শনিবার পর্যন্ত বন্ধ ছিল ৮৪৭ কারখানা।
শিল্প পুলিশ জানায়, আশুলিয়া-সাভার, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনায় কারখানা রয়েছে ৮ হাজার ২২৬টি। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গাজীপুরের ২২২টি কারখানা গতকালও বন্ধ ছিল। এই এলাকায় কারখানার সংখ্যা ১ হাজার ৮৯২। খুলনায় ৬০০ কারখানার মধ্যে বন্ধ রয়েছে ১৪৪টি। নারায়ণগঞ্জের ২ হাজার ২৩২টি কারখানার মধ্যে বন্ধ ৫৪টি। তার বাইরে সাভার-আশুলিয়ায় ৭টি ও চট্টগ্রামে ১৮টি কারখানা চালু হয়নি। অবশ্য কিছু কারখানা নানাবিধ কারণে দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধ রয়েছে।
গত ২৮ জুন শুরু হওয়া সীমিত ও পরে ১ জুলাই শুরু হওয়া কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও খোলা ছিল কারখানাগুলো। ঈদুল আজহার ব্যবসার জন্য সরকার ১৫ জুলাই থেকে আট দিনের জন্য বিধিনিষেধ শিথিল করে। সেই সঙ্গে ২৩ জুলাই থেকে শুরু হওয়া দুই সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধে পোশাকসহ সব শিল্পকারখানা বন্ধ থাকবে বলে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সেই প্রজ্ঞাপনের পরপরই কারখানা চালু রাখতে মাঠে নামেন তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর নেতারা। তবে সরকার তখন নমনীয় হয়নি। পরে ব্যবসায়ীদের চাপের মুখে চলতি মাসের প্রথম দিন থেকে রপ্তানিমুখী কারখানা খোলার সুযোগ দেয়। তবে বিধিনিষেধের কারণে সড়কে গাড়ি না থাকায় শ্রমিকেরা কর্মস্থলে ফিরতে দুর্ভোগে পড়েন।
বিধিনিষেধের মধ্যে ১০ দিন ধরে পোশাক ও বস্ত্র কারখানা চালুর সুযোগ পেলেও গতকাল পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে ২১টি। তার মধ্যে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর ৭টি, নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর ৪টি এবং বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএর সদস্য ১০টি কারখানা বন্ধ রয়েছে।
কারখানাগুলোর বন্ধের বিষয়ে শিল্প পুলিশ জানায়, সাভার-আশুলিয়া এলাকার গ্লোরি ড্রেসেস ও ক্রিয়েটিভ স্টাইল ওয়্যার পর্যাপ্ত ক্রয়াদেশ না থাকায় ঈদের পর খোলেনি। গাজীপুরের একই মালিকানাধীন স্টাইল ক্র্যাফট ও ইয়ংওয়ান অর্থাভাবে শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া মজুরি দিতে না পারায় ২৪ আগস্ট পর্যন্ত কারখানা বন্ধ রেখেছে। একই এলাকার এসারসন ডিজাইন, প্রাইমা কনসেপ্ট, ব্লেসিং নিটওয়্যার, ব্লেসিং নিটওয়্যার, গ্রিন সোয়েটার, পিকার্স টুইস্টিং এবং এম এন এম ফ্যাশনসে কাজ না থাকায় আপাতত বন্ধ। কারখানাগুলোতে কাজ করতেন ৬ হাজার ২৮৫ জন শ্রমিক।
এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জের নারায়ণগঞ্জের রকি টেক্সটাইল, কটন পাওয়ার এক্সেল নিট, এক্সোটিক নিট, ইউনিয়ন টেক্সটাইল ও মুসা টেক্সটাইল বন্ধ রয়েছে। তার মধ্যে কটন পাওয়ার এক্সেল নিট গত ১৪ এপ্রিল থেকে বন্ধ। ইউনিয়ন টেক্সটাইল গত ৯ মে বন্ধ করা হয়।
করোনার মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা চালু রাখতে নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (চলতি দায়িত্ব) সাকিউন নাহার বেগম প্রথম আলোকে বলেন, কারখানাগুলোর স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি তদারকির জন্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও কাজ
করছেন। আরও কয়েকটি তদারকি কমিটি করার প্রক্রিয়া চলছে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে কারখানাগুলোর বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত গুরুতর অভিযোগ মেলেনি।
No comments